১৬ তম গ্রেডের পেনশন কত টাকা
- আপডেট সময় : ০৭:১৭:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৯৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশে সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে প্রায়ই প্রশ্ন ওঠে। ২০২৫ সালে ১৬ তম গ্রেডের পেনশন কত টাকা? ১৬ তম গ্রেডের কর্মচারীরা অবসরের সময় তাদের চাকরির শেষ মূল বেতনের প্রায় অর্ধেক সমপরিমাণ টাকা মাসিক পেনশন হিসেবে পাবেন।
এছাড়া গ্র্যাচুইটি ও প্রভিডেন্ট ফান্ডসহ অতিরিক্ত সুবিধাও থাকে।
কেন পেনশন এত গুরুত্বপূর্ণ?
চাকরি করার মূল উদ্দেশ্য শুধু মাসিক বেতন নয়, বরং জীবনের শেষভাগে একটি স্থায়ী নিরাপত্তা পাওয়া। আমি নিজে এমন অনেক সরকারি কর্মচারীকে চিনি, যারা অবসরের পর শুধু পেনশন ভরসায় সচ্ছল জীবন কাটাচ্ছেন।
একজন ১৬ তম গ্রেডের কর্মচারী হয়তো ভাবতে পারেন, “আমার অবসরের পর কেমন থাকবে আয়?” এই প্রশ্নের উত্তর জানলে আগেভাগেই আর্থিক পরিকল্পনা করা সহজ হয়।
১৬ তম গ্রেড: কোন কোন পদ ও বেতন স্কেল
বাংলাদেশে ১৬ তম গ্রেড সাধারণত জুনিয়র পর্যায়ের চাকরিজীবীদের জন্য নির্ধারিত। যেমন: অফিস সহকারী, ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট, কারিগরি সহকারী ইত্যাদি পদ।
২০২৫ সালের সরকারি বেতন কাঠামো অনুযায়ী, এই গ্রেডের বেতন সাধারণত ৯,৩০০ টাকা থেকে শুরু হয়ে প্রায় ২২,৪৯০ টাকায় শেষ হয়। চাকরির মেয়াদ ও ইনক্রিমেন্টের উপর নির্ভর করে বেতন বাড়তে থাকে।
১৬ তম গ্রেডের পেনশন কত
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, পেনশন হিসাব করা হয় কর্মচারীর শেষ প্রাপ্ত মূল বেতন থেকে। সাধারণত মূল বেতনের ৫০%–এর কাছাকাছি অর্থ মাসিক পেনশন হিসেবে পাওয়া যায়।
উদাহরণস্বরূপ:
- যদি একজন ১৬ তম গ্রেডের কর্মচারীর অবসরের সময় মূল বেতন হয় ২২,০০০ টাকা, তবে তার পেনশন হবে আনুমানিক ১১,০০০ টাকা মাসিক।
- এর সঙ্গে যুক্ত হবে এককালীন গ্র্যাচুইটি এবং প্রভিডেন্ট ফান্ড।
গ্র্যাচুইটি ও প্রভিডেন্ট ফান্ড সুবিধা
শুধু মাসিক পেনশনই নয়, অবসরের পর কর্মচারীরা এককালীন বড় অঙ্কের টাকা পান। এটিকে বলা হয় গ্র্যাচুইটি। সাধারণত চাকরির শেষ বেতনের গুণফল ও চাকরির বছর অনুযায়ী এটি নির্ধারিত হয়।
আমার এক আত্মীয় ৩০ বছর চাকরি শেষে ১৬ তম গ্রেড থেকে অবসর নিয়ে প্রায় ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকার গ্র্যাচুইটি পেয়েছিলেন। এ ছাড়া প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকেও একটি উল্লেখযোগ্য অঙ্ক পাওয়া যায়, যা অবসরের পর জীবনের বড় সহায় হয়ে ওঠে।
১৬ তম গ্রেডের পেনশন হিসাব করার সহজ সূত্র
১. শেষ মূল বেতন নির্ধারণ করুন।
২. সেটিকে ৫০% দিয়ে ভাগ করুন।
৩. এটাই হবে আনুমানিক মাসিক পেনশন।
উদাহরণ:
শেষ বেতন ২০,০০০ টাকা হলে → মাসিক পেনশন ≈ ১০,০০০ টাকা।
অন্যান্য গ্রেডের সাথে তুলনা
যদিও ১৬ তম গ্রেডের পেনশন তুলনামূলকভাবে কম, তবে এটিও জীবনের একটি নিরাপদ ভিত্তি তৈরি করে। যেমন- ১০ তম গ্রেডের পেনশন ১৬ তম গ্রেডের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়ে থাকে। এ কারণে যারা নিম্ন গ্রেডে চাকরি করেন, তাদের জন্য বাড়তি সঞ্চয় ও পরিকল্পনা জরুরি।
চাকরিজীবীদের জন্য কিছু ব্যক্তিগত টিপস
আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, শুধু পেনশনের উপর নির্ভর করলে অবসরের পর অনেক সময় সমস্যা হতে পারে। তাই:
- চাকরি চলাকালীন কিছুটা টাকা সঞ্চয় করুন।
- প্রভিডেন্ট ফান্ডে নিয়মিত অবদান রাখুন।
- গ্র্যাচুইটি পাওয়ার পর সেই টাকা দিয়ে নিরাপদ বিনিয়োগ করুন (যেমন: ব্যাংক ফিক্সড ডিপোজিট বা জমি ক্রয়)।
এভাবে অবসরের পর শুধু পেনশন নয়, আরও অতিরিক্ত আয়ের উৎস তৈরি করা সম্ভব।
উপসংহার
২০২৫ সালে ১৬ তম গ্রেডের পেনশন কত টাকা? এর উত্তর হলো, শেষ বেতনের প্রায় অর্ধেক টাকা মাসিক পেনশন হিসেবে পাওয়া যায়। এছাড়া গ্র্যাচুইটি ও প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে বড় অঙ্কের টাকা মিলে অবসরের পর একটি স্থায়ী আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত হয়।
যারা এখনো চাকরিতে আছেন, তাদের জন্য পরামর্শ শুধু পেনশন নয়, বরং আগেভাগে সঞ্চয় ও বিনিয়োগ পরিকল্পনা করুন। তাহলেই অবসরের পর জীবন হবে শান্তিময় ও সচ্ছল।
প্রশ্ন উত্তর
১৬ তম গ্রেডে চাকরির সর্বনিম্ন বেতন কত?
প্রায় ৯,৩০০ টাকা (২০২৫ সালের কাঠামো অনুযায়ী)।
১৬ তম গ্রেডের চাকরিজীবী কত বছর চাকরি করলে পূর্ণ পেনশন পায়?
কমপক্ষে ২৫ বছর চাকরি করলে পূর্ণ পেনশনের সুযোগ থাকে।
সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন কি জীবনভর পাওয়া যায়?
হ্যাঁ, কর্মচারীর মৃত্যুর পরও স্ত্রী/স্বামী বা সন্তানেরা নির্দিষ্ট নিয়মে পেনশন ভাতা পান।






















