নোয়াখালী কোন বিভাগে অবস্থিত
- আপডেট সময় : ১২:৪৭:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫ ৭৬ বার পড়া হয়েছে
নোয়াখালী কোন বিভাগে অবস্থিত — এই প্রশ্নটি বহু মানুষের মনে আসে। সংক্ষিপ্ত উত্তর হলো: নোয়াখালী চট্টগ্রাম বিভাগে অবস্থিত। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী জেলা নোয়াখালী। এই জেলা শুধু ভৌগোলিকভাবে নয়, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকেও বিশেষভাবে সমৃদ্ধ। চলুন বিস্তারিতভাবে জানি নোয়াখালী সম্পর্কে।
নোয়াখালী কোন বিভাগে অবস্থিত
বাংলাদেশে মোট আটটি প্রশাসনিক বিভাগ রয়েছে। এর মধ্যে নোয়াখালী জেলা চট্টগ্রাম বিভাগের অন্তর্ভুক্ত। চট্টগ্রাম বিভাগে মোট ১১টি জেলা রয়েছে, যার মধ্যে নোয়াখালী একটি। চট্টগ্রাম বিভাগকে বলা হয় দেশের অর্থনৈতিক শক্তিকেন্দ্র। এর মধ্যে নোয়াখালী কৃষি, মৎস্য এবং প্রবাসী আয়ের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত।
নোয়াখালীর ভৌগোলিক অবস্থান
নোয়াখালী বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত। পূর্বে ফেনী ও চট্টগ্রাম, পশ্চিমে ভোলা ও লক্ষ্মীপুর, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর এবং উত্তরে কুমিল্লা জেলা দ্বারা নোয়াখালী বেষ্টিত। এখানকার চরাঞ্চল এবং উপকূলীয় এলাকা নোয়াখালীকে আলাদা বৈশিষ্ট্য দিয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, হাটিয়া দ্বীপ এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বিস্তৃত চরভূমি কৃষি ও মৎস্য উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নোয়াখালীর ইতিহাস ও নামকরণ
অনেকে বলেন, নোয়াখালী নাম এসেছে দুটি শব্দ থেকে — “নোয়া” (নতুন) এবং “খালী” (খাল)। ১৭শ শতকে মেঘনা নদীর ভাঙনে নতুন খাল সৃষ্টি হলে এর নামকরণ হয় “নোয়াখালী”। ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যায়, ব্রিটিশ আমলে নোয়াখালী ছিল কৃষি ও ব্যবসার জন্য বিখ্যাত। আজও এই জেলার মানুষ পরিশ্রমী হিসেবে সারা দেশে পরিচিত।
নোয়াখালীর শিক্ষা ব্যবস্থা
এই জেলায় অসংখ্য বিদ্যালয়, কলেজ এবং মাদ্রাসা রয়েছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (NSTU)। এটি দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের উচ্চশিক্ষার অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে। একজন শিক্ষার্থী যদি মফস্বল এলাকা থেকে আধুনিক শিক্ষার স্বপ্ন নিয়ে আসে, NSTU তার জন্য বড় সুযোগ তৈরি করে। আমি ব্যক্তিগতভাবে দেখেছি অনেক শিক্ষার্থী এখান থেকে পড়াশোনা শেষ করে বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছে।
নোয়াখালীর অর্থনীতি
নোয়াখালীর অর্থনীতি মূলত কৃষি ও মৎস্যকেন্দ্রিক। চরাঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে ধান, পাট ও শাকসবজি উৎপন্ন হয়। তাছাড়া সমুদ্র ও নদীভিত্তিক মাছধরা এখানকার মানুষের জীবিকার প্রধান অংশ। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো প্রবাসী আয়। মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে বসবাসরত নোয়াখালীবাসীরা বৈদেশিক মুদ্রা পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন।
নোয়াখালীর পর্যটন ও দর্শনীয় স্থান
নোয়াখালীতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কোনো কমতি নেই। হাটিয়া দ্বীপ, দুধমুখী সমুদ্রসৈকত, নিঝুম দ্বীপ এবং চরাঞ্চল পর্যটকদের আকর্ষণ করে। উদাহরণস্বরূপ, নিঝুম দ্বীপে অসংখ্য হরিণের পাল দেখতে পর্যটকরা ছুটে যান। এটি বাংলাদেশের অন্যতম অনন্য পর্যটন কেন্দ্র।
নোয়াখালীর সংস্কৃতি ও অবদান
নোয়াখালীকে বলা হয় “প্রবাসীদের জেলা”। তাদের প্রবাসী আয় ছাড়াও সংস্কৃতি, সাহিত্য ও রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এখানকার মানুষ সরল, পরিশ্রমী ও অতিথিপরায়ণ। কোনো উৎসব বা বিয়েতে গেলে নোয়াখালীর ঐতিহ্যবাহী খাবার যেমন পান্তাভাত, ইলিশ ভাজা ও দেশীয় মিষ্টির স্বাদ ভুলবার নয়।
আমার সর্বশেষ কথা
নোয়াখালী কোন বিভাগে অবস্থিত — তার সঠিক উত্তর হলো: নোয়াখালী চট্টগ্রাম বিভাগে অবস্থিত। তবে শুধু বিভাগেই সীমাবদ্ধ নয়, নোয়াখালী তার ইতিহাস, সংস্কৃতি, শিক্ষা ও অর্থনৈতিক অবদানের জন্য পুরো বাংলাদেশেই গর্বের স্থান দখল করেছে। যদি কখনো সুযোগ পান, তবে নোয়াখালী ভ্রমণ করে দেখুন। আপনি এখানকার প্রকৃতি, মানুষ ও আতিথেয়তায় মুগ্ধ হবেন।
আকিজ গ্রুপ কত টাকার মালিক। আরো বিস্তারিত জানতে চাইলে এইখানে যান।





















