AI Impact on Jobs 2026: 89% Roles to Change Globally
২০২৬ সালে ৮৯% চাকরিতে এআইয়ের প্রভাব, বদলাচ্ছে নিয়োগের নিয়ম
- আপডেট সময় : ০৪:৩৩:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ১১ বার পড়া হয়েছে
চাকরিতে এআইয়ের প্রভাব: বিশ্বজুড়ে কর্মক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের (AI) দাপট ক্রমেই বাড়ছে। এটি এখন আর কেবল কোনো সফটওয়্যার বা যন্ত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, বরং মানুষের কাজের ধরণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় বড় পরিবর্তন আনছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি পরিচালিত শীর্ষ মানবসম্পদ কর্মকর্তাদের এক জরিপে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জরিপ বলছে, আগামী এক বছরের মধ্যে বা ২০২৬ সাল নাগাদ প্রায় ৮৯ শতাংশ চাকরিতে এআইয়ের প্রভাব পড়বে।
জরিপে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা জানান, এআই চাকরির অর্ধেকের বেশি ক্ষেত্রে সরাসরি ভূমিকা রাখতে পারে। যদিও অনেক প্রতিষ্ঠান এখনো এআইয়ের পূর্ণাঙ্গ ব্যবহার শুরু করেনি, তবে চাকরির কাঠামোতে বড় পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
এআইয়ের উত্থান: পুনরাবৃত্তিমূলক কাজে যন্ত্রের দখল
জরিপের তথ্যমতে, শীর্ষ কর্মকর্তাদের একটি অংশ মনে করেন, ঠিক কতটা চাকরিতে এআইয়ের প্রকৃত প্রভাব পড়বে তা এখনই নিশ্চিত করে বলা কঠিন। তবে সংস্থাগুলো তাদের বিভিন্ন বিভাগের কর্মীদের কাজের ধরণ পুনর্বিন্যাস করতে শুরু করেছে।
বিশেষ করে যেসব কাজ পুনরাবৃত্তিমূলক (Repetitive tasks)—যেমন ডাটা এন্ট্রি, সাধারণ মেইল লেখা বা শিডিউলিং—সেসব এখন এআই টুলের মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে। এর ফলে কর্মীরা কৌশলগত ও সৃজনশীল কাজে বেশি মনোনিবেশ করার সুযোগ পাচ্ছেন। সিএনবিসির গবেষণা অনুযায়ী, এআই টুলস সঠিকভাবে ব্যবহার করলে প্রতি সপ্তাহে একজন কর্মীর গড়ে ৭.৫ ঘণ্টা সময় বাঁচানো সম্ভব।
ডিগ্রি নয়, দক্ষতাভিত্তিক নিয়োগে জোর
চাকরিক্ষেত্রে নিয়োগের চিরাচরিত প্রথাতেও বদল আসছে। জরিপে অংশ নেওয়া এক কর্মকর্তা জানান, ভবিষ্যতে চাকরি প্রাপ্তি শুধু বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি বা শিক্ষাগত যোগ্যতার ওপর নির্ভর করবে না। বরং এআই-সহায়ক দক্ষতা বা ‘AI-Literacy’ অনুযায়ী নিয়োগের হার বাড়বে।
বিশ্বজুড়ে এআইয়ের মাধ্যমে কর্মীদের সৃজনশীলতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি, মিডিয়া, ব্যাংকিং, কল সেন্টার ও তৈরি পোশাক খাতগুলোতে এআইয়ের প্রয়োগ আগের তুলনায় দ্রুততর হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানগুলো যদি সঠিকভাবে এআই ব্যবহার করে, তবে কর্মীদের কাজের চাপ কমানোর পাশাপাশি নতুন উদ্ভাবনের পথ প্রশস্ত হবে।
কর্মী ছাঁটাই নাকি দক্ষতা বৃদ্ধি?
এআইয়ের প্রসারের ফলে কর্মী ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা নিয়েও জরিপে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল। দেখা গেছে, আগামী বছর কিছু সংস্থা কর্মী ছাঁটাই করতে পারে। তবে এই ছাঁটাই মূলত সংস্থার খরচ নিয়ন্ত্রণের (Cost Cutting) কারণে হবে, সরাসরি দক্ষতা বৃদ্ধির কারণে নয়।
জরিপে অংশ নেওয়া কর্মকর্তাদের ৬১ শতাংশ মনে করছেন, এআই ব্যবহার সংস্থাকে আরও দক্ষ ও উৎপাদনশীল করেছে। অন্যদিকে ৭৮ শতাংশ কর্মকর্তা মনে করেন, এআই তাঁদের সংস্থাকে উদ্ভাবনী ক্ষেত্রে শক্তিশালী করেছে। অর্থাৎ, এআই কর্মীদের চাকরি কেড়ে নিচ্ছে না, বরং যারা এআই ব্যবহারে দক্ষ, তাদের অবস্থান শক্ত হচ্ছে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট: প্রস্তুতি ও চ্যালেঞ্জ
বৈশ্বিক এই পরিবর্তনের ঢেউ বাংলাদেশেও লাগতে শুরু করেছে। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রযুক্তি কেবল মানুষের প্রতিস্থাপন নয়, বরং কাজকে সমৃদ্ধ করার উপায়। বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি, কল সেন্টার ও তৈরি পোশাক খাতে (RMG) এআই ব্যবহারের সুযোগ বাড়ছে।
তবে দেশের চাকরিপ্রার্থী ও প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সরকার ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ বিষয়ে নীতি প্রণয়ন এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রে এখন শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি প্রযুক্তি ব্যবহার, সমস্যা সমাধান ও সৃজনশীলতার মানদণ্ডও গুরুত্ব পাচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের প্রস্তুতি কর্মীদের ভবিষ্যৎ কর্মজীবনে স্থায়িত্ব দেবে এবং বিশ্বজুড়ে চাকরিতে এআইয়ের প্রভাব বা পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করবে।
আরও পড়ুন: Exam Strategy: নেগেটিভ মার্কিং এড়ানোর ৫টি বৈজ্ঞানিক কৌশল: জানা প্রশ্নেও কেন ভুল হয়?















